মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাতায়াত সময়সূচী গুলো জেনে রাখলে সময়মত আমাদের সবারই উপকার হবে।
মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে কলকাতা সপ্তাহে ৪ দিন যায়, বুধবার, শুক্রবার, শনিবার এবং রবিবার। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সকাল ৮:১৫ সময়ে ছেড়ে কলকাতা চিতপুর স্টেশন এ পৌঁছায় বিকাল ৪টায়। কলকাতা থেকে ঢাকা আসে সপ্তাহে ৪ দিন। সোমবার, মঙ্গলবার, শুক্রবার এবং শনিবার। কলকাতা চিতপুর স্টেশন থেকে ছাড়ে সকাল ৭:১০ সময়ে আর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছায় বিকাল ৪:০৫ সময়ে।
ভাড়ার হারঃ-
* ঢাকা টু কলকাতা :
AC কেবিনের প্রতি সিট = ২৫২২ টাকা + ৩৭৮ টাকা (ভ্যাট) + ৫০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স = ৩৪০০ টাকা
AC চেয়ার = ১৭৪৮ টাকা + ২৫২ টাকা ( ভ্যাট ) + ৫০০ ট্রাভেল ট্যাক্স = ২৫০০ টাকা
* কলকাতা টু ঢাকা :
AC কেবিনের প্রতি সিট = ২০১৫ রুপি
AC চেয়ার = ১৩৪৫ রুপি
* শিশুদের জন্য ৫০% ডিস্কাউন্ট প্রযোজ্য হবে যদি ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে বয়স হয়ে থাকে। পাসপোর্ট অনুসারে বয়স নির্ধারিত হবে।
* সিংগেল কেবিনে ৩ টি সিট, এবং ডাবল কেবিনে ৬ টি সিটের টিকিট দেয়া হয়।
টিকিট সংগ্রহের পদ্ধতি
* ঢাকা টু কলকাতা এর টিকিট কাটতে হবে “কমলাপুর রেল স্টেশন” ও “চট্টগ্রাম রেল স্টেশন” গিয়ে। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী ট্রেনের টিকিট আর কোথাও বিক্রয় হয় না।
* প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টিকিট দেয়া হয়।
* যাত্রার ২৯ দিন আগ থেকে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করা যাচ্ছে।
* প্রত্যেক টিকেটের জন্য কাউন্টারে পাসপোর্টের মূলকপি (কোনো ফটোকপি গ্রহনযোগ্য নয়) দেখিয়ে ফরম নিতে হবে। এসময় ফরমে সিরিয়াল নাম্বার লিখে দেয়া হবে। তারপর ফরমটি পূরন করে অপেক্ষা করতে হবে। সিরিয়াল অনুযায়ী ডাকা হবে টিকিট নেয়ার জন্য।
* ভিসা না থাকলেও টিকিট দেয়া হয় কাউন্টার থেকে। তবে ফিরতি টিকিটের জন্য ভিসা আবশ্যক।
* টিকিট ফেরত: যাত্রা শুরুর ১২০ ঘণ্টা পূর্বে ফেরতের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ বাবদ ২৫ টাকা, ১২০ ঘণ্টার কম ও ৯৬ ঘণ্টার বেশি সময়ের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ বাবদ ৫০% ভাড়া কর্তনযোগ্য হবে প্রতি টিকিটে।
৯৬ ঘণ্টার কম ও ৭২ ঘণ্টার বেশি সময়ের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ বাবদ টিকিটের মূল্যের ৭৫% টাকা কর্তনযোগ্য। অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো মূল্য ফেরতযোগ্য নয়।
* কলকাতা টু ঢাকা ট্রেনের টিকিট কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে কাটতে পারবেন। মোট টিকিটের ২০% টিকিট দেয়া হয় ঢাকা থেকে। আর বাকি ৮০% টিকেট কলকাতা কাউন্টার থেকে দেয়া হয়।
* কলকাতা টু ঢাকা এর টিকিট কাটতে হবে ডালহৌসীর “ফেয়ারলী প্লেস রেলওয়ে বিল্ডিং” অথবা চিতপুরের “কলকাতা টার্মিনাল” স্টেশনে গিয়ে। কলকাতা-ঢাকা ট্রেনের টিকিট আর কোথাও বিক্রয় হয় না।
* ফেয়ারলী প্লেসে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত টিকিট দেওয়া হয়। আর কলকাতা স্টেশনে টিকিট দেয়া হয় বিকাল ৪ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত স্টেশনের ২য় তলায়।
মৈত্রী ট্রেনের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া
ঢাকা থেকে কলকাতা যাওয়ার সময় –
* ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছানোর পর “ইমিগ্রেশন ফর্ম” সংগ্রহ করে সেটা পূরণ করুন।
* কলকাতা স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই ট্রেনে ভারতীয় ইমিগ্রেশনের ডিসএমবারকেশন কার্ড বা অবতরণপত্র বিতরণ করা হবে। সেটি পূরন করবেন। ফরমে ঠিকানা ও ফোন নাম্বরের জায়গায় আপনার হোটেলের ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিবেন। তবে যারা আত্মীয়ের বাসায় উঠবেন তারা আত্মীয়ের পুরো নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বার দিবেন।
* ট্রেন থামার পর দ্রুত ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়ান। এ সময় ভারতীয় কাস্টমসের পক্ষ থেকে একটি Declaration ফরম দেয়া হবে। সেটি পূরন করবেন। ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পর মালপত্র স্ক্যানিং মেশিনে তুলে তল্লাশি করিয়ে বের হওয়ার আগে পূরণকৃত ফরমটি জমা দিতে হবে।
* চাকুরীজীবীদের NOC সাথে রাখা আবশ্যক।
কলকাতা থেকে ঢাকা আসার সময় –
* সকাল ৫টার মধ্যে কলকাতা চিতপুর স্টেশনে পৌঁছাবেন।
* কলকাতা স্টেশনে প্রথম কাজ হল Declaration ফরম নিয়ে তা যথাযথভাবে পূরন করে ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়ানো।
* ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছানোর পর যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের এমবারকেশন কার্ড বা আরোহণ পত্র বিতরণ করা হবে। এছাড়া কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতার জন্য কেবিন যাত্রী ও চেয়ারকোচ যাত্রীদের জন্য আলাদা লাইন রয়েছে এই স্টেশনে।
ট্রাভেল ব্যাগ এর ওজন:
একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি ৩৫ কেজি পর্যন্ত মালামাল বিনা মাশুলে নিতে পারবেন দুটো লাগেজে। যদি বাচ্চা থাকে তবে তার জন্য ২০ কেজি পর্যন্ত বিনামাশুলে নিতে পারবেন সাথে।
৩৫ কেজির বেশি মালামালের ক্ষেত্রে, ৩৫ কেজি থেকে ৫০ কেজি হলে প্রতি কেজিতে ২ ডলার করে মাশুল দিতে হবে প্রতি কেজিতে। এবং ৫০ কেজির বেশি হলে প্রতি কেজিতে ১০ ডলার করে গুনতে হবে মাশুল।
বিঃদ্রঃ ট্রেনে সম্মানিত যাত্রীদের সুবিধার্থে সংযোজিত খাবার গাড়ীতে হালকা খাবার ও পানীয়র ব্যবস্থা রয়েছে যা যাত্রী কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে সরবরাহ করা থাকে। খাবারের মেনু ও মূল্যতালিকা খাবার গাড়ীতে প্রদর্শিত থাকে।
ভ্রমণকালীন সময়ে ট্রেন কোথাও অনির্ধারিত যাত্রাবিরতিতে দাঁড়িয়ে পড়লে ট্রেন থেকে ওঠা/নামা দন্ডনীয় অপরাধ। এরুপ চেষ্টাকারীকে রেলওয়ে পুলিশের আওতায় ধরিয়ে দেয়া হবে।