মালয়েশিয়ার পর্যটন বিভাগের ট্যাগ লাইন হলো ‘‘Trouly Asia’’ এক সত্যিকারের এশিয়া দেখার আমন্ত্রণ পেলেও আপনি দেখতে পারবেন এশিয়ার চেয়ে বেশী কিছু। অনেকেই মালয়েশিয়াকে বলেন এশিয়ার ইউরোপ। ইউরোপের মতো জীবনমান হলেও এখানকার জীবনযাত্রার খরচ কিন্তু বাংলাদেশের তুলনায় খুব বেশি বলা যাবে না। সুন্দর মনোমুগ্ধহাটকর ও সামাজিক নিরাপত্তায় আর অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ মালয়েশিয়া। তবে বিভিন্ন দেশ থেকে যেমন চীন ও ভারত থেকে আগত বংশোদ্ভুত মালয় নাগরিক বিশেষ করে যারা পুলিশে ও ইমিগ্রেশনে কর্মরত আছে। তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশী শ্রমিক, ট্যুরিস্ট ও ব্যবসায়ীদের অপমান ও নির্যাতন করার।
ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর দেশ মালয়েশিয়া। এখানে মালয়, চায়নিজ আর ভারতীয়দের পাশাপাশি বাংলাদেশিরাও নিজেদের স্থান করে নিয়েছে যদিও এজন্য প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাদেরকে ব্যাপক সংগ্রাম করতে হয়েছে। শুধু শ্রমিকই নন, নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ী শ্রেণিও রয়েছে বাংলাদেশিদের। হয়তো তাদের সংখ্যা বেশী নয়। টাইমস স্কয়ার, লো-ইয়েট প্লাজা, চায়না মার্কেট বা ওল্ড টাউনই শুধু নয়, কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতান আর কোতোরায়াতে
বেশ সুনামের সঙ্গেই ব্যবসা করে যাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। আবার পেনাং বা মালাক্কার মতো পর্যটন শহরগুলোতেও রয়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি।
মালয়েশিয়ার ভিসা
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন ফরমটি www.imi.gov.my সাইট থেকে ডাউনলোড করে নিয়ে যথাযথভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে। সরাসরি ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হয় না। ২৫টি অনুমোদিত এজেন্সীর মাধ্যমে ভিসা আবেদনপত্রটি জমা দিতে হবে। কেবলমাত্র ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে রেফারেন্সসহ ভিসা ইস্যু করা হয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে সেদেশের কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান স্পন্সর করতে হবে। ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ দিন অবস্থানের অনুমতি দেয়া হয়, মেয়াদ বৃদ্ধির কোন সুযোগ নেই। ভিসার জন্য আবেদন করার পর মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন যদি বাড়তি কোনও কাগজ চায় তবে ই-মেইলে তারা সেটি জানানোর পরে বাড়তি কাগজ অনলাইনে দিতে হবে। এছাড়া তাদের যদি কোনও সন্দেহ হয় তবে তারা আবেদনকারীকে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য ডাকতে পারে। ভিসা হয়ে গেলে মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন ই-মেইলের মাধ্যমে সেটি জানিয়ে দেয়।
এটা নতুন অনলাইন পদ্ধতি। এছাড়া আগের নিয়মেও সব কাগজপত্রসহ পাসপোর্ট দূতাবাসে জমা দেওয়ার পরে পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্প দেওয়া হয়। নতুন নিয়ম চালু করা হলেও এর পাশাপাশি পুরনো পদ্ধতিও চালু আছে।
প্রয়োজনীয় কাগজ
সাদা পেছনসহ দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি;
ছবিগুলোর স্টুডিও প্রিন্ট হতে হবে। কারণ অনেকে কম্পিউটার
প্রিন্ট ছবি দিয়ে থাকেন। যা এক্ষেত্রে কার্যকর নয়।
পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ৬ মাস থাকতে হবে এবং পাসপোর্টে
অন্তত তিনটি ধারাবাহিক খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
পাসপোর্টের ফটোকপি ও মূলকপি।
আগে মালয়েশিয়া ভ্রমণ করে থাকলে ভিসার কপি।
ফিরতি বিমান টিকেটের কপি।
আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ হিসেবে অন্তত তিন মাসের ব্যাংক
স্টেটমেন্ট, সাথে ব্যাংক সলভেন্সি। বাংলাদেশর বাইরে
অবস্থানরতদের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড। ব্যাংকে ২
লাখ টাকার উপরে থাকলে ভালো।
ভ্রমণের কারণ উল্লেখ করে করা আদেনপত্র।
কারো আমন্ত্রণে মালয়েশিয়া গেলে আমন্ত্রণপত্র বা রেফারেন্স
লেটার।
ভিসা ফি: বর্তমানে ৩১০০ টাকা। তবে আপনি কোনো
এজেন্সির সাহায্য নিলে তাদের সার্ভিস চার্জ যোগ করতে হবে।
মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন
বেশ কয়েকমাস ধরেই মালয়েশিয়া এয়ারপোর্টে বাংলাদেশি ট্যুরিস্ট বিশেষ করে শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের খবর পাওয়া যাচ্ছে। কোনো কারণ ছাড়াই বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে শুধু তাই নয় কখনো কখনো ইমিগ্রেশন থেকে শ্রমিকদের আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হচ্ছে, এ ধরনের আচরণ ওরা কখনো কখনো ট্যুরিস্টদের সাথেও করে। সম্প্রতি মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা কতৃক এক বাংলাদেশীকে চড় মারার ঘটনা ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ওরা খুব বাজে ব্যবহার করে বাংলাদেশীদের সাথে। এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। তবুও দেশটির সৌন্দর্য এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধার কারণে আমাদের দেশের লাখ লাখ মানুষ প্রতিবছর মালয়েশিয়ায় বেড়াতে যায় মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে প্রয়োজনীয় অর্থ ও ফ্লাইট বুকিং এর কাগজ দেখাতে হবে। তাই আমাদের পরামর্শ আপনার যত রকম কাগজপত্র ভিসার জন্য দেবেন, সেগুলোর একটা কপি সাথে রাখতে ভুলবেন না। সাথে হোটেল বুকিং স্লিপ, ফিরতি বিমান টিকেট এবং হোটেলের ফোন নাম্বার। প্রয়োজনে আগের দিন হোটেলের সাথে ফোনে কথা বলে নেবেন। এছাড়া আপনার পেশাগত আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, ফরোয়াডিং লেটার, এনওসি এসবও সাথে রাখবেন। নিজের পোষাক আসাক ও গেটআপের প্রতি নজর দিবেন। ব্রান্ডের চশমা, কোট, জুতা, ঘড়ি, মোবাইল, ব্রিফকেস এসব ব্যবহার করবেন। চুল সুন্দরভাবে আগেই ছেটে নেবেন। মুখমন্ডল ফ্রেস রাখবেন। ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন। বিশেষ করে যাদেরকে দেখতে শ্রমিক মনে হয় এবং আগে মালয়েশিয়া আসেনি বা খুব বেশী ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নেই তাদেরকে ওরা সন্দেহ করে। প্রয়োজনে এই বিষয়ে খোজ খবর নেবেন। এবং আগে মালয়েশিয়া গিয়েছেন বা রয়েছেন এরকম কারো সাথে যোগাযোগ করে নেবেন।
দেখার জন্য মালয়েশিয়া
কুয়ালালাম পুর: কুয়ালালামপুর যেন এক উৎসব নগরী। এখানে খাবার এবং ভ্রমণ বিনোদনের নানা আয়োজন। এমনকি কেনাকাটার জন্যও ভালো। এখানে যেমন ব্রান্ডশপ ও দামী
জিনিসের পসরা আছে। তেমনি আছে সস্তায় ভালো পন্য পাওয়ার সুবিধা। এখানে দেশী ভাইয়েরা সব রকমের খাবারের আয়োজন করে রেখেছে। সিঙ্গারা চমুচা জিলাপী কোনোটাই পেতে খুব বেগ পেতে হবেনা। যাতায়াতের জন্য টেক্সি, ট্যুরিস্ট বাসতো আছেই। আপনি চাইলে উবার ব্যবহার করতে পারবেন অনায়াসে। বাংলাদেশীদের জন্য আলফা জেনেসিস হোটেল বেশ ভালো, কারণ এই হোটেলের পাশে বাংলা রেস্টুরেন্ট আছে ২টা। পাশে ডর নামে একটা হোটেল আছে। এর দাম কম তবে রুমগুলো একটা ছোটো। বাংলাদেশী টাকায় ২ হাজার টাকা গুনলে মাই হোটেলে থাকতে পারবেন। দাম ও মানে এর সমন্বয় আছে। পাশে সুইস গার্ডেন হোটেল এখানে ৫ হাজার টাকার মধ্যে থাকা যায়। রাতে আশপাশের এলাকা গুলো গানে গানে জেগে ওঠে। জালানা রোড হচ্ছে স্ট্রিট ফুডের স্বর্গ। এখানে এমনকি এর পাশেপাশে রেস্টুরেন্টগুলোতেও খাবারের দাম বেশী নয়। আলবাইক ফাস্টফুডের খাবারের মান ঢাকার অনেক রেস্টুরেন্ট থেকে ভালো, দামও প্রায় অর্ধেক।
কেনাকাটার জন্য প্লাজা লো ইয়াফ। প্রতিযোগিতামুলক দামেই এখানে সবকিছু পা্ওয়া যায়। তবে এখানে বাংলাদেশের মতো কপি বা চায়না ও মালয়েশিয়ান নকলপন্য রয়েছে। তাই জানা কাউকে ছাড়া এখান থেকে কোনো কিছু কঠিন। তবে মোবাইলের সিমের ক্ষেত্রে সে সমস্যা নেই। জনপ্রিয় ও জনবহুল শপিংমল প্যাভেলিয়নেও পর্যটকেরা ভিড় জমায়। খাবার সিনেমা কেনাকাটা সব কিছুই হরদম। তবে এখানে জিনিসপত্রের দাম বেশী। তবে হালাল খাবারের জন্য মালয়েশিয়ার সর্বত্রই সুবিধা রয়েছে। ফারেনহাইট শপিং মলটিও দামী পন্যের। সাধ্যের মধ্যে সবকিছু পেতে চলে যেতে পারেন। বেরজায়া টাইম স্কয়ারে। এখানে শপিং, খাওয়া, আর সিনেমা সব সুলভ মূল্যে। অল্ংকার, কসমেটিক্স বাংলাদেশের অনেক জায়গায় চেয়ে দাম কম। এরকম আরেকটি মল হলো সুংগেই ওয়াং প্লাজা। আর গুলিস্তানের মতো দরদাম করে কেনাকাটা করতে চাইলে চায়না টাউনে যেতে পারেন কুয়ালালামপুর গেলে ট্যুরিস্ট বাসে ঘুরতে ভুলবেননা যেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে ৩ ঘন্টার মধ্যে।পরিচ্ছন্ন নগরী খোলাবাসে ঘুরে শহর দেখার অনুভূতি অসাধারণ। শহরে দেখা পাবেন লম্বা লেজ বিশিষ্ঠ বানরের। পুরো শহরটা উপর থেকে দেখতে যেতে পারেন। কে এল টাওয়ারে। টুইন টাওয়ারের সামনে দাড়িয়ে কোনো উৎসব কিংবা থার্টি ফাস্ট নাইটের জাকজমক দেখলে সেটা মনে থেকে যাবে।
পেনাং: মালয়েশিয়ার প্রধান ও এশিয়ার বিখ্যাত দ্বীপ পেনাং। নীল জলরাশি, পাহাড় ও বিশাল সেতুর বন্ধনে আবদ্ধ পেনাং। গভীর সমুদ্রে বিশাল জেটি। এখানে আমদানি পণ্য খালাস করা হয়। গভীর সমুদ্র বন্দর থেকে জেটির মাধ্যমে পণ্য খালাসের জন্য মূল ভূখণ্ড থেকে গভীর সমুদ্রে নেয়ার জন্য আরেকটি সুন্দর সেতু আছে। সবই দেখার মতো। পেনাং এর রাষ্ট্রীয় মসজিদ গ্রীনলেন বন্দরের কাছেই। এটা মালয়েশিয়ার সবচেয়ে জমকালো মসজিদ হিসেবে পরিচিত। পুলাউ পেনাংয়ে ৬৪ তলা বিশাল একটি গোলাকার শপিং মল রয়েছে। এখানে পছন্দমতো পণ্য কেনা যাবে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮৩০ মিটার উঁচু এই পাহাড়ে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত নেমে আসে এবং এখান থেকে জর্জ টাউনের সুন্দর চলমান দৃশ্য ও মালয় উপদ্বীপের উপকূলভূমির দৃশ্য দেখা যায়। লংকাউই: কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় ২৫০ মাইল দূরে মালয়েশিয়ার পশ্চিমে এ দ্বীপটি অবস্থিত। বিদেশি পর্যটকের কাছে
অন্যতম এবং মালয়েশিয়ার অসম্ভব সুন্দর এ দ্বীপটির নামকরণ করা হয়েছে ঈগল পাখির মালয় নাম অনুসারে। এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলো হলো ঈগল স্কোয়ার, লংকাউই কেবল কার, জিও ফরেস্ট পার্ক, তেলাগা তুজুহ ঝর্না, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, চেনাং রাতের বাজার ইত্যাদি।
তামান নেগারা: এটি মালয়েশিয়ার প্রথম এবং প্রাচীনতম সংরক্ষিত এলাকা। Taman Negara অর্থ হল “জাতীয় উদ্যান”। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম ট্রপিক্যাল রেইনফরেস্ট এর মধ্যে একটি। এখানে বৃহদায়তন গাছের পাশাপাশি রয়েছে অনেক ঝরনা, জলপ্রপাত। রয়েছে জঙ্গলের মনোরম পরিবেশে ট্রেকিংয়ের সুব্যবস্থা। পৃথিবীর দীর্ঘতম ট্রেকিংওয়ে বা বনের মধ্যে পায়ে হাঁটার পথ রয়েছে এখানে। এছাড়া বহু প্রজাতীর প্রাণী, পাখি ও ছোট প্রাণী দেখতে পাবেন।
টাম্বুনের লস্ট ওয়ার্ল্ড : পেরাকের ঘনবনে অবস্থিত টাম্বুনের সানওয়ে লস্ট ওয়ার্ল্ড। এটা আসলে কৌতুক, রোমাঞ্চ ও পুনঃশক্তিসঞ্চারণের সমন্বয়। এখানে জলের সিক্ততা, শুষ্ক জমির ওপর এক লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা, হিংস্র বাঘদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, পাখি ও জীবজন্তুদের তাদের নিজস্ব আবাসে পরিদর্শন ইত্যাদি দেখতে পাবেন। প্রকৃতিকে এখানে যত্নে রাখা হয়েছে আর সেটাই হয়েছে পর্যটনের উপাদান।
মাউন্ট কিনাবালু: মাউন্ট কিনাবালু মূলত গ্রানাইট শৃঙ্গ, এটি হিমালয় এবং নিউ গিনির মধ্যে অবস্থিত সর্বোচ্চ শিখর। রহস্যময় মাউন্ট কিনাবালু সাধারণত মেঘের মধ্যে আবৃত থাকে। তাজা, শীতল বায়ু ভ্রমণার্থীদের সজীব ও প্রাণবন্ত করে তোলে। Mount Kinabalu উচ্চতা ৪,০৯৫ মিটার। এটি মালয়েশিয়ায়ও সর্বোচ্চ পর্বত।
সানওয়ে উপহ্রদ: এটি পুরনো খনি জমির উপর নির্মিত। এখানকার ওয়্যাটার পার্কে নিজেকে ভিজিয়ে নেয়ার সুযোগ বিনোদনমূলক পার্ক, বন্যপ্রাণী উদ্যানে জীবজন্তুদের সাথে
সাক্ষাততো আছেই। বাটু কেভস: মালয়েশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্যটন আকর্ষণ বাটু কেভস ওরফে শ্রী শুব্রমানিয়ার মন্দির। মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গোর রাজ্যে অবস্থিত মন্দিরটি একটি প্রতিকী পর্যটন গন্তব্যস্থল ।সূঙ্গাই বাটু: এর গুহাগুলি সূঙ্গাই বাটু বা বাটু নদীর নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছিল। বাটুর চুনাপাথরের গুহাগুলি ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় 400 ফুট উচ্চে নির্ধারিত রয়েছে। এটি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এখানে ৩ টি বৃহদাকার এবং বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্রাকার গুহা রয়েছে এবং সবচেয়ে বড় গুহাটির নাম হল মন্দির গুহা। এর সিলিং প্রায় ১২২ মিটার উঁচু। পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার: কুয়ালালামপুরে অবস্থিত এক অত্যাধুনিক নকশার সঙ্গে নির্মিত দ্বৈত আকাশচুম্বী স্তম্ভ। এর নকশা করেছেন বিখ্যাত স্থপতি সেজার পেলি। তিনি এটি ইসলমি প্রতীক রূব ঈল হিজাব-এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে নকশায়িত করেছিলেন। পেট্রোনাস টাওয়ারগুলি, 1998 থেকে
2004 সাল পর্যন্ত পৃথিবীর সর্বোচ্চ ভবন । ৮৮ তলা পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের ৪১ তম ও ৪২ তম ফ্লোর থেকে দুটি টাওয়ারের মধ্যে একটি সংযোগ সেতু রয়েছে যার নাম স্কাইব্রিজ।
লেগোল্যান্ড: লেগো-থিমের ওয়্যাটার পার্ক ও হোটেল। শিশুদের কল্পনাকে একটি বাস্তবসম্মত রূপ দেয়া হয়েছে যোর নাম লেগোল্যান্ড। স্থানটিতে তাৎক্ষণিক প্রবেশের জন্য অর্থের নিবন্ধন এবং লেগো খেলনা বিক্রয়কারী বড় দোকান রয়েছে।
ইশতানা বুদায়া: মালয়েশিয়ার জাতীয় থিয়েটার ইশতানা বুদায়া বা “সংস্কৃতির প্রাসাদ” হল এক অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থল। এখানে জাতীয় সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা এবং জাতীয় কয়ার্ বিভিন্ন সঙ্গীতানুষ্ঠান, ব্যালে, যাত্রা এবং ক্ষুদ্র গীতিনাট্য প্রদর্শিত হয়। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শিল্পীরা এখানে সরাসরি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। সঙ্গীত এটি বিশ্বের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দশটি অত্যাধুনিক থিয়েটারের একটি।
বুকিত বিনতাঙ্গ: বিশ্বের সবচেয়ে এক উত্তেজনাপূর্ণ কেনাকাটার তোরণ “গোল্ডেন ট্র্যাঙ্গেল” বা “স্বর্ণালী ত্রিভূজ” শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত বুকিত বিনতাঙ্গ, নিঃসন্দেহে এক
রোমাঞ্চকর কেনাকাটার জায়গা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লোকেরা আসে এখানে। অসাধারণ খাবারের লোভেও এখানে অনেকে আসেন। ক্যামেরুন পার্বত্য অঞ্চল: মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বৃহত্তম শৈল শহর সমভূমির তপ্ত উত্তাপ থেকে অনেক দূরে অবস্হিত ক্যামেরুন পার্বত্য অঞ্চল। মালয়েশিয়ার এক অন্যতম বৃহৎ শৈলশহর এবং একইভাবে স্থানীয় ও পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় ও রহস্যময় স্থান। এখানে রয়েছে নানা বিনোদন উপাদান; যেমন আদিবাসী স্ট্রবেরি খামার এবং গোলাপ বাগান পরিদর্শন, চা চাষের মধ্যে দিয়ে ভ্রমণ ও খামারের তাজা উৎপাদন সামগ্রীর কেনাকাটা । সমু্দ্রপৃষ্ঠ থেকে 1500 মিটার উপরে এটি মূলত পশ্চিমী মালয়েশিয়ায় অবস্থিত
মুলু কেভস: মালয়েশিয়ার পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থান হল মুলু কেভস (Mulu Caves)। গুহাটি মালয়েশীয় বোর্নিও এর গুনুং মুলু ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত।
পার্কটি অবিশ্বাস্যভাবে অনেকগুলো গুহা দ্বারা ঘেরা। এই ভূগর্ভস্থ গুহাগুলির একটিতে পাওয়া সরওয়াক (Sarawak) গুহাপ্রকোষ্ঠটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গুহা গুহাপ্রকোষ্ঠ। বলা হয়ে থাকে যে, এর প্রকোষ্ঠের আকার এতই বড় যে, এর ভেতরে অনায়াসে ৪০টি বোইং-৭৪৭ উড়োজাহাজ এটে যেতে পারে এবং তাও কোন পাখা ওভারল্যাপিং না করে।
এছাড়া মালাক্কা সিটি (Malacca City), বুকিত বিনতাঙ্গ (Bukit Bintang), অ্যাকোয়ারিয়া কে.এল.সি.সি, আ’ফ্যামোসা রিসোর্ট (A’Famosa Resort), পুলাউ তিওমান (Pulau Tioman), পারহেন্টিয়ান আইল্যান্ড (Perhentian Islands), গেনটিং পার্বত্য অঞ্চল ইত্যাদি রয়েছে মালয়েশিয়ায় দেখার তালিকায়।
4.5